আসসালামু আলাইকুম, সবাই কেমন আছেন। সকলের সুস্থতা কামনা করে শুরু করছি আজকের আর্টিকেল।
ঘোরাঘুড়ি করতে কার না ভাল লাগে। বাংলাদেশ এমন একটি দেশ যার রূপের বর্ণনা করে শেষ করার কোন উপায় নাই। আর যদি বান্দরবনের কথায় আসি তাহলে তো হইছে। যা হোক বান্দরবন বাংলাদেশের এমন এক জায়গা যার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের কোন তুলনা হয়না।
ভৌগলিক পরিচিতি
বান্দরবান বাংলাদেশের ২১০১১' উত্তর অক্ষাংশ হতে ২২০২২' উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯২০৪০' পূর্ব দ্রাঘিমাংশ হতে ৯২০৪১' পূর্ব দ্রাঘিমাংশে অবস্থিত। এ জেলার উত্তরে রাঙ্গামাটি জেলা, দক্ষিণে আরাকান (মায়ানমার), পূর্বে ভারত এবং পশ্চিমে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলা অবস্থিত। প্রধান গিরি শ্রেণীর মধ্যে-মিরিঞ্জা, ওয়ালটং,তামবাং এবং পলিতাই উলেস্নখযোগ্য। এখানে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৪.৬ ডিগ্রী সেলসিয়াস এবং সর্বনিম্ন ১৩ ডিগ্রী সেলসিয়াস ও বার্ষিক বৃষ্টিপাত ৩০৩১ মি: মি:। এখানকার পাহাড় শ্রেণী সমূহ সমুদ্র পৃষ্ঠ হতে ৩০০-১১০০ মিটার উচ্চে অবস্থিত। সাঙ্গু, মাতামুহুরী এবং বাঁকখালী এ জেলার প্রধান নদী ।
জেলার ঐতিহ্য
ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাঙ্গামাটি এবং কক্সবাজার থেকে বান্দরবান বাস যোগাযোগ রয়েছে। বান্দরবান শহর থেকে প্রায় ৪ কিলোমিটার দূরে বালাঘাটায় রয়েছে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বৌদ্ধ মন্দির। এটি সম্পূর্ণরূপে দক্ষিণ-পশ্চিম এশিয়ার মন্দিরগুলোর অনুকরণে তৈরি করা হয়েছে এবং বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বৌদ্ধ মুর্তিটি এখানে রয়েছে। স্থানীয়ভাবে এটি হলো "বুদ্ধ ধাতু জাদি"। এছাড়া শহরের মধ্যেই রয়েছে জাদিপাড়ার রাজবিহার এবং উজানীপাড়ার বিহার। শহর থেকে চিম্বুকের পথে যেতে পড়বে বম ও ম্রো উপজাতীয়দের গ্রাম। প্রান্তিক হ্রদ, জীবননগর এবং কিয়াচলং হ্রদ আরও কয়েকটি উল্লেখ্য পর্যটন স্থান। রয়েছে মেঘলা সাফারী পার্ক, যেখানে রয়েছে দুটি সম্পূর্ণ ঝুলন্ত সেতু। সাঙ্গু নদীতে নৌকাভ্রমণ, ভ্রমণ পিয়াসীদের জন্য হতে পারে একটি মনোহর অভিজ্ঞতা। বান্দরবান শহর থেকে ৮ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত শৈল প্রপাত একটি আকর্ষণীয় পাহাড়ি ঝর্ণা।
এছাড়া বাংলাদেশের উচ্চতম পর্বতশৃঙ্গ তাজিংডং এবং বৃহত্তম পর্বতশৃঙ্গ কেওক্রাডং এই বান্দরবান জেলাতেই অবস্থিত। মৌসুমগুলোতে এই দুটি পর্বতশৃঙ্গে আরোহন করার জন্য পর্যটকদের ভীড় জমে উঠে। পর্যটকরা সাধারণত বগা লেক থেকে হেঁটে কেওক্রাডং এ যান। অনেকেই আছেন যারা কেওক্রাডং না গিয়ে বগা লেক থেকে ফিরে আসেন। এই হ্রদটিও বিশেষ দর্শনীয় স্থান। হ্রদসন্নিহিত এলাকায় বম উপজাতিদের বাস। এছাড়া অন্যান্য আকর্ষণের মধ্যে আছে:
- বাকলাই ঝরণা
- বগা লেক
- বুদ্ধ ধাতু জাদি
- চিম্বুক পাহাড় রেঞ্জ
- চিনরি ঝিরি ঝরণা
- ফাইপি ঝরণা
- জাদিপাই ঝরণা
- কেওক্রাডং
- মেঘলা
- মিরিংজা পর্যটন
- নাফাখুম
- রেমাক্রি
- নীলাচল
- নীলগিরি
- থানচি
- পতংঝিরি ঝরণা
- প্রান্তিক লেক
- রাজবিহার
- উজানিপারা বিহার
- রিজুক ঝরণা
- সাংগু নদী
- শৈল প্রপাত
- তাজিংডং
- উপবন পর্যটন
দর্শনীয় স্থান
নাম | কিভাবে যাওয়া যায় | অবস্থান |
---|---|---|
চিম্বুক পাহাড় | চাঁন্দের গাড়ি/ঝীপ/মাইক্রোবাস/পাবলিক বাস যোগে। | বান্দরবান সদর উপজেলার সদর ইউনিয়নের আওতাভূক্ত |
নীলগিরি | যে কোনো গাড়িতে চড়ে সরাসরি নীলগিরিতে যাওয়া যায়। | বান্দরবান জেলা সদর থেকে প্রায় ৪৭ কিলোইমটার দক্ষিণ পূর্ব দিকে বান্দরবান-থানছি সড়কে পাহাড় চূড়ায় নীলগিরি পর্যটন কেন্দ অবস্থিত। |
মেঘলা পর্যটন কমপেস্নক্স | শহর থেকে চান্দের গাড়ি বেবি টেক্সি, জীপ, কার যোএগ যাওয়া যায়। | শহর এথেক ৪ কি: মি: দূরে জেলা পরিষদের বিপরীতে সুন্দর মনোরম পরিবেশে অবস্থিত। |
বগা লেক | শুষ্ক মৌসুমে বান্দরবান হতে চাঁন্দের গাড়িতে যাওয়া যায়। ভাড়া | রুমা উপজেলায় অবস্থিত। |
নীলাচল | শহর থেকে চান্দের গাড়ি বেবি টেক্সি, জীপ, কার যোগে যাওয়া যায়। | শহর থেকে 5 কি. মি. দূরে টাইগার পাড়া এলাকায় অবস্থিত। |
শৈল প্রপাত | শহর থেকে চান্দের গাড়ি/বেবী টেক্সি/প্রাইভেট কার/জীপে যাওয়া যায়। | বান্দরবান-রুমা সড়কে 8 কি. মি. দূরত্বে অবস্থিত। |
প্রান্তিক লেক | চাঁন্দের গাড়ি/ঝীপ/মাইক্রোবাস/পাবলিক বাস যোগে | বান্দরবান –কেরানি হাট সড়কের হলুদিয়া নিকটবর্তী এলাকায়। |
জীবন নগর পাহাড় | কেবলমাত্র শুষ্ক মৌসুমে গাড়ি করে এর কাছাকাছি পৌছঅ সম্ভব। বান্দরবান সদর হতে অথবা রুমা উপজেলা সদর হতে চাঁন্দের গাড়ি ভাড়া পাওয়া যায়। | বান্দরবান সদর হতে প্রায় 70 কি. মি. দূরে থানচি উপজেলায় অবস্থিত। |
মিরিঞ্চা | বান্দরবান শহর থেকে জীপ/চান্দের গাড়ি প্রাইভেট কারে যাওয়া যায়। | বান্দরবান জেলার লামা উপজেলায়। |
আলী সুড়ঙ্গ | আলীদম উপজেলা সদর থেকে 4 কিলোমিটার দূরে এর অবস্থান। একটি লোহায় সিঁড়ি বেয়ে এ সুড়ঙ্গে যেতে হয়। সাথে টচ লাইট থাকা ভাল। | ভাল। বান্দরবান শহর থেকে 118 কিলোমিটার দূরে আলীকদম উপজেলায় এটি অবস্থিত। |
শ্রভ্র নীল | চান্দের গাড়ি, প্রাইভেট কার, বেবি টেক্সি | শহর থেকে 5 কি. মি. দূরে টাইগার পাড়া এলাকায় অবস্থিত। |
তাজিংডং বিজয় | কেবলমাত্র শুষ্ক মৌসুমে গাড়ি করে কাছাকাছি পৌঁছা সম্ভব। বান্দরবান সদর হতে অথবা রুমা উপজেলা সদর হতে চাঁন্দের গাড়ি ভাড়া পাওয়া যায়। | রুমা উপজেলায় |
কেওক্রাডং | বগালেক থেকে শুষ্ক মৌসুমে চাঁন্দের গাড়িতে পাহাড় চূড়ায় পৌছা যায়। তবে এ জাতীয় গাড়ির সংখ্যা খুবই কম বিধায় গমনের পূর্বেই গাড়ী ভাড়া করতে হবে। সম্প্রতি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কেওক্রাডং পাহাড় সফর করেছেন। তিনি এখানে একটি স্মৃতি ফলক উন্মোচন করেন। | রুমা উপজেলায় |
ক্যামলং জলাশয় | জেলা শহর থেকে 5 কি. মি.। রিকশা, ইজিবাইক সহ সকল যানবাহন যোগে এখানে যাওয়া যায়। | জেলা শহর থেকে 5 কি. মি.। রিকশা, ইজিবাইক সহ সকল যানবাহন যোগে এখানে যাওয়া যায়। |
উপবন লেক | শহর থেকে চান্দের গাড়ি বেবি টেক্সি, জীপ, কার যোগে যাওয়া যায়। | বান্দরবান জেলাধীন নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা সদরে অবস্থিত কৃত্রিম হ্রদ। |
কানাপাড়া পাহাড় | চাঁন্দের গাড়ি জীপ বেবী টেক্সিতে কানাপাড়া যাওয়া যায়। | বান্দরবান সদর উপজেলার সদর ইউনিয়নের আওতাভূক্ত |
বৌদ্ধ ধাতু জাদী (স্বর্ণ মন্দির) | শহর থেকে চান্দের গাড়ি বেবি টেক্সি, জীপ, কার যোগে যাওয়া যায়। | বান্দরবান শহর হতে ৪ কিঃমিঃ দূরত্বে বান্দরবান-রাংগামাটি সড়কের পার্শ্বে পুরপাড়া নামক স্থানে সুউচ্চ পাহাড়ের চূড়ায় স্বর্ণ মন্দির এর অবস্থান। |
বান্দরবন সম্পর্কে জেনে নিন এই ভিডিও দেখে।
আশা করি পোষ্টটি সবার ভাল লাগবে। ধন্যবাদ
No comments:
Post a Comment