#blog-pager{clear:both;margin:30px auto;text-align:center; padding: 7px; } .blog-pager {background: none;} .displaypageNum a,.showpage a,.pagecurrent{font-size: 13px;padding: 5px 12px;margin-right:5px; color: #AD0B00; background-color:#FAB001;} .displaypageNum a:hover,.showpage a:hover, .pagecurrent{background:#DB4920;text-decoration:none;color: #fff;} #blog-pager .pagecurrent{font-weight:bold;color: #fff;background:#DB4920;} .showpageOf{display:none!important} #blog-pager .pages{border:none;}

Monday, August 31, 2015

মুদ্রা দোষ !!!

কেমন আছেন সবাই, সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে ভালই আছেন আশা রাখছি।
মুদ্রা দোষ! দুনিয়ায় এমন খুব কম মানুষ আছে যার একটা না একটা মুদ্রা দোষ নাই। মুদ্রা দোষ আসলে বড় কোন দোষ না। এইটা মানুষের এমন একটি অভ্যাস যা মানুষ নিজের অজান্তেই করে থাকেন। অনেক সময় এই দোষ অনেকের পছন্দের কারণ হয়। আবার অনেক সময় মারাত্মক অপছন্দের ব্যাপার হয়ে  দাঁড়ায়। 

কারো মুদ্রা দোষ প্রকাশ পায় কথায় কথায়। কারো মুদ্রা দোষ প্রকাশ পায় কাজে কর্মে। ব্যাক্তিগত ভাবে আমার নিজের একটা মুদ্রা দোষ আছে। সেটা হল কথার মুদ্রাদোষ। আমি কথায় কথায় বলে থাকি "কোন সমস্যা নাই" এইটা আমার একটা বাজে মুদ্রা দোষ। 

আমি একজনকে চিনি যার কথায় কথায় "এই আর কি" এই আর কি বলার মুদ্রা দোষ রয়েছে। আবার কিছু মানুষ আছে যারা ইয়ে মানে ইয়ে মানে না করলে যেন তার কথা আধুরা রয়ে যায়।

এক বন্ধুর কথা না বললেই নয়। যার প্রধান কাজ হচ্ছে একটা ম্যাচের কাঠি নিয়ে নিজের নাকের ভেতরের এমন অংশে গুতো মারা যাতে করে তার হাচি আসে। এইটা সে সারাদিন করতেই থাকে। এই কাজ না করলে তার যেমন চলেই না। অন্যদিকে অন্যান্য লোকজন এতে মারাত্মক রকমের বিরক্ত বোধ করে থাকেন।





আবার কিছু মানুষ আছেন যারা বেহুদায় হাসবে। কোন কারণ ছাড়াই হাসবে। আজব কিসিমের মুদ্রা দোষ এটি। তারা কোন পরিবেশ পরিস্থিতি বিবেচনা করে না। তাদের কাছে হাসা টাই মুখ্য।









এই মুদ্রাদোষ যাদের আছে, তাঁরা কথায় কথায় নিজের প্রতিভা জাহির করেন। কখন কোথায় কী বলছেন কোন খেয়াল থাকে না। আর কাল্পনিক মুদ্রাদোষের মতো বাচনিক মুদ্রাদোষও ভয়াবহ। কেউ কেউ আছেন হঠাৎ হঠাৎ ক্ষেপে যান, এটাও কী এক ধরণের মুদ্রাদোষ। কেউ কেউ সময় অসময় নেই অন্যের ত্রুটি খুঁজে বেড়াতে পছন্দ করেন এটাও কী মুদ্রাদোষ? আবার অনেকেই মামলার ভয় দেখিয়ে বেড়াতে বেশ পছন্দ করেন, এটাকেও কি মুদ্রাদোষের পর্যায়ে ফেলা যায়? মনোবিজ্ঞানীরা ভালো বলতে পারবেন। বিশ্লেষণে আরও দড় হবেন তাঁরা। তবে মোদ্দাকথা দাঁড়াচ্ছে এই যে, মুদ্রাদোষ জিনিসটা খুব মারাত্মক। এক ভদ্রলোকের মুুদ্রাদোষ ছিল। কথায় কথায় তিনি 'তোমার' শব্দটি যোগ করে দিতেন। গেছেন এ বন্ধুকে দাওয়াত করতে। খাবারের মেন্যু কী হবে সেটা বলছিলেন তিনি বন্ধুকে। কেমন করে বললেন, সেটা জানা যাক। বললেন, 'কাল আমার বাড়িতে তোমার দাওয়াত। আসবেই কিন্তু, না এলে ভাই তোমার বিচার হবে। তোমার কব্জি ডুবিয়ে বন্ধুরা খাওয়া-দাওয়া করবো। ধরো তোমার খাসির মাংস ভুনা হবে। তোমার বেগুন ভাজা হবে। তোমার রুই মাছের দোপেঁয়াজি হবে। আর তোমার মাথা দিয়ে হবে মুড়োঘন্ট!'



মুদ্রাদোষ নানা রকমের হতে পারে। যেমন :-হাতের নখ কামড়ানো বা পা নাচানো।-কথা বলার সময় বার বার শ্রাগ করা।-হাতের কাছে কিছু পেলেই সেটা নিয়ে কান চুলকানো।-মাথা বা শরীরের কোন স্থান চুলকানো।-কোন একটি বিশেষ শব্দ বার বার ব্যবহার করা।-হাতের আঙ্গুল ফোটানো।মানুষ নিজের অজান্তেই এগুলোর চর্চা করতে থাকে। আসুন জেনে নেই মুদ্রাদোষগুলো থেকে নিজেরাই নিজেদের কিভাবে মুক্তি দিতে পারি।১. প্রথমে মুদ্রাদোষটি শনাক্ত করুন।২. সব সময় সচেতন থাকুন, যাতে মনের ভুলে এমন অভ্যাসের চর্চা না হয়। ৩. যিনি আনমনে বারবার পা নাড়েন, তিনি বসার ধরন বদলে ফেলুন।৪. যিনি কথা বলতে বলতে হাত নাড়েন, তিনি হাত পেছনে রেখে মনে জোর নিয়ে এসে কথা বলতে পারেন।৫. নিজের ওপর নিজের নিয়ন্ত্রণ রাখুন।৬. যেকোনো কাজে গভীর মনোনিবেশ করুন।৭. আলস জীবনযাপন বা অতিরিক্ত ঘুমের অভ্যাস বাদ দিন।৮. নিয়মিত ব্যায়াম এবং ধ্যান করে মুদ্রাদোষ পরিহার করার ক্ষমতা তৈরি করুন।৯. কাছের মানুষদের জানিয়ে রাখুন, যাতে তাঁরা থামিয়ে দেন বা মনে করিয়ে দেন।১০. মুদ্রাদোষ থেকে মুক্তি পেতে আরেকটি ব্যায়াম করা যেতে পারে। তা হলো যিনি পা নাড়ান কিংবা হাত দিয়ে নাক, কান বা মাথা চুলকাতে থাকেন, তিনি দিনের একটা সময় ধরে একটানা পা বা হাতের দিকে স্থিরভাবে তাকিয়ে থাকুন। মনোযোগ নিয়ে দেখুন আর ভাবতে থাকুন অভ্যাসগুলোর কথা।১১. মাত্রাতিরিক্ত হয়ে গেলে অবশ্যই মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।

এই সেই রাতারগুল














চলুন যাই নির্মলতার দেশে


মালনীছড়া চা বাগান 
 

চা একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় পানীয়। সকালে এক কাপ গরম চা না পেলে বাঙালী সমাজের যেন একদম চলে না। বাংলাদেশের যে কয়টি অঞ্চলে চা বাগান পরিলক্ষিত হয় তার মধ্যে সিলেট অন্যতম। সিলেটের চায়ের রঙ, স্বাদ এবং সুবাস অতুলনীয়। উপমহাদেশের প্রথম চা বাগান সিলেট শহরে অবস্থিত। নাম মালনীছড়া। ১৮৪৯ সালে এই চা বাগান প্রতিষ্ঠিত। বর্তমানে বেসরকারী তত্তবধানে চা বাগান পরিচালিত হয়ে আসছে। ১৫০০ একর জায়গার উপর এই চা বাগান অবস্থিত।চা বাগানের পাশাপাশি বর্তমানে এখানে কমলা ও রাবারের চাষ করা হয়।
মালনীছড়া চা বাগান ছাড়াও সিলেটে  লাক্ষাতুড়া চা বাগান, আলী বাহার চা বাগান, খাদিম, আহমদ টি স্টেট, লালাখাল টি স্টেট উল্লেখযোগ্য।
অবস্থান: মালনীছড়া এবং লাক্ষাতুড়া চা বাগান দুইটিই সিলেট শহরের উপকন্ঠে অবস্থিত। শহরের কেন্দ্রস্থল জিন্দাবাজার পয়েন্ট হতে গাড়ীতে মাত্র ১৫ মিনিটের পথ।
কি কি দেখবেন: পাহাড়ের গায়ে চা বাগানের দৃশ্য, ছায়া বৃক্ষ, চা শ্রমিকদের আবাসস্থল, কমলার বাগান, রাবার বাগান, চা তৈরীর প্রক্রিয়া।
কোথায় অবস্থান করবেন: সাধারনত চা বাগানে থাকার তেমন কোন সুব্যবস্থা নাই। আপনাকে সিলেট শহরেই থাকতে হবে। থাকার তথ্যর জন্য আমাদের হোটেল আবাসন লিংকে ক্লিক করুন।


জাফলং  

রকৃতি কন্যা হিসাবে সারাদেশে এক নামে পরিচিত সিলেটের জাফলং।খাসিয়া জৈন্তা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত জাফলং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপরুপলীলাভূমি। পিয়াইন নদীর তীরে স্তরে স্তরে বিছানো পাথরের স্তূপ জাফলংকে করেছেআকর্ষণীয়। সীমান্তের ওপারে ইনডিয়ান পাহাড় টিলা, ডাউকি পাহাড় থেকে অবিরামধারায় প্রবাহমান জলপ্রপাত, ঝুলন্ত ডাউকি ব্রীজ, পিয়াইন নদীর স্বচ্ছ হিমেলপানি,উঁচু পাহাড়ে গহিন অরণ্য ও শুনশান নিরবতার কারণে এলাকাটি পর্যটকদেরদারুণভাবে মোহাবিষ্ট করে। এসব দৃশ্যপট দেখতে প্রতিদিনই দেশী-বিদেশীপর্যটকরা ছুটে আসেন এখানে। প্রকৃতি কন্যা ছাড়াও জাফলং বিউটি স্পট, পিকনিকস্পট, সৌন্দর্যের রাণী- এসব নামেও পর্যটকদের কাছে ব্যাপক পরিচিত। ভ্রমনপিয়াসীদের কাছে জাফলং এর আকর্ষণই যেন আলাদা। সিলেট ভ্রমনে এসে জাফলং নাগেলে ভ্রমনই যেন অপূর্ণ থেকে যায়।
সিলেটনগরী থেকে ৬২ কিলোমিটার উত্তর পূর্ব দিকে গোয়াইনঘাট উপজেলায় জাফলং এরঅবস্থান। জাফলংয়ে শীত ও বর্ষা মওসুমের সৌন্দর্যের রুপ ভিন্ন। বর্ষায় জাফলংএর রুপ লাবণ্য যেন ভিন্ন মাত্রায় ফুটে উঠে। ধূলি ধূসরিত পরিবেশ হয়ে উঠেস্বচ্ছ। স্নিগ্ধ পরিবেশে শ্বাস-নি:শ্বাসে থাকে ফুরফুরে ভাব। খাসিয়া পাহাড়েরসবুজাভ চূড়ায় তুলার মত মেঘরাজির বিচরণ এবং যখন-তখন অঝোরধারায় বৃষ্টিপাহাড়ি পথ হয়ে উঠে বিপদ সংকুল-সে যেন এক ভিন্ন শিহরণ। সেই সঙ্গে কয়েক হাজারফুট উপর থেকে নেমে আসা সফেদ ঝর্ণাধারার দৃশ্য যে কারোরই নয়ন জুড়ায়।
ইতিহাসঘেঁটে জানা যায়, হাজার বছর ধরে জাফলং ছিল খাসিয়া জৈন্তা-রাজার অধীন নির্জনবনভূমি। ১৯৫৪ সালে জমিদারী প্রথা বিলুপ্তির পর খাসিয়া জৈন্তা রাজ্যেরঅবসান ঘটে। তারপরও বেশ কয়েক বছর জাফলংয়ের বিস্তীর্ণ অঞ্চল পতিত পড়ে রয়েছিল।ব্যবসায়ীরা পাথরের সন্ধানে নৌ পথে জাফলং আসতে শুরু করেন। পাথর ব্যবসারপ্রসার ঘটতে থাকায় গড়ে উঠে নতুন জনবসতিও। আশির দশকে সিলেটের সাথে জাফলং এর৫৫ কিলোমিটার সড়ক যোগাযোগ প্রতিষ্ঠিত হয়। এরপর থেকে জাফলংয়ের নয়নাভিরামসৌন্দর্যের কথা সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ে। দেশী-বিদেশী পর্যটকদের পাশাপাশিপ্রকৃতিপ্রেমীরাও ভিড় করতে থাকেন জাফলংয়ে। জাফলং এখন দেশের সেরা পর্যটনস্পট।
কিভাবে যাওয়া যায়: 
অবস্থান: সিলেট জেলার গোয়াইনঘাট উপজেলায় অবস্থিত। সিলেট জেলা সদর হতে সড়ক পথে দুরুত্ব মাত্র ৫৬ কি.মি। সিলেট থেকে যাতায়াতঃ সিলেট থেকে আপনি বাস/ মাইক্রোবাস/ সিএনজি চালিত অটোরিক্স্রায় যেতে পারেন জাফলং এ। সময় লাগবে ১ ঘন্টা হতে ১.৩০ ঘন্টা। ভাড়াঃ বাস -জনপ্রতি ৫৫ টাকা মাইক্রোবাস- ১৭০০-২০০০/-টাকা সি এন জি চালিত অটো রিক্সাঃ ৭০০/ টাকা।
কোথায় থাকবেন
থাকারতেমন বেশি সুব্যবস্থা জাফলং এ নাই। তবে যে কয়টি ব্যবস্থা আছে তার মধ্যেজেলা পরিষদের নলজুরী রেস্ট হাউস(থাকতে হলে পূর্বে অনুমতি নিতে হবে), শ্রীপুর পিকনিক স্পট উল্লেখযোগ্য। কিছু বোডিং এর ব্যবস্থা আছে। এছাড়াশ্রীপুর ফরেস্টে এর একটি বাংলো আছে পর্যটকদের থাকার জন্য।

                                                                রাতারগুল

রাতারগুল সোয়াম্প ফরেস্ট। বাংলাদেশের একমাত্র জলাবন যা ‘সিলেটের সুন্দরবন’ নামে খ্যাত। এই অরণ্য বছরে ৪-৫ মাস পানির নিচে থাকে। তবে জলে কোমর ডুবিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা বনের গাছগুলো দেখতে পর্যটকরা ভিড় জমায় বেশী বর্ষার মৌসুমে। তখন অবশ্য ডিঙ্গি নৌকায় করে ঘুড়তে হয়। ডিঙিতে চড়ে বনের ভিতর ঘুরতে ঘুরতে দেখা যাবে প্রকৃতির রূপসুধা। জলমগ্ন বলে এই বনে সাঁপের আবাসটাই বেশি, তবে ভাগ্য ভালো হলে দেখা হয়ে যেতে পারে দু-একটা বানরের সাথে। তাছাড়া চোখে পরার মত বনে সাদা বক, কানা বক, মাছরাঙ্গা, টিয়া, বুলবুলি, পানকৌড়ি, ঢুপি, ঘুঘু, চিলসহ নানা জাতের পাখিতো আছেই।
অবস্থানঃ  সিলেট জেলার গোয়াইনঘাটের ফতেহপুর ইউনিয়নে, গুয়াইন নদীর দক্ষিণে এই বনের অবস্থান। সিলেট শহর থেকে এর দূরত প্রায় ২৬ কিলোমিটার। যেতে লাগবে-  গাড়ি > ইঞ্জিন নৌকা > ডিঙ্গি নৌকা।
যেভাবে যাবেনঃ রাতারগুল যেতে পারেন দু-দিক দিয়ে। এয়ারপোর্টের পেছন থেকে একটা বাইপাস রোড ফতেহপুর হয়ে হরিপুরে গিয়ে মিশেছে। এদিকেও যেতে পারেন। অথবা জাফলং রোডেও যেতে পারেন। তবে যেতে হবে সিলিট থেকেই। আমি গিয়েছিলাম হরিপুর রোডে। যাইহোক, মানুষ ৬-৮ জন হলে প্রথমেই সিলেট শহরে ‘চৌহাট্টা (মাদ্রাসা মাঠের পাশ) থেকে একটা মাইক্রোবাস ঠিক করে নিন। আসা-যাওয়ার বাবদ খরচ পরবে ১৫০০ থেকে ২০০০ টাকার মত। মাইক্রোবাসে করে প্রায় ঘন্টাখানেক যাওয়ার পর পৌছে যাবেন গোয়াইন নদীর তীরে। এখানে নেমেই ড্রাইভারের মোবাইল নাম্বার নিয়ে নিন (পরে এসে যেন খুঁজে পেতে সমস্যা না হয়)। তারপর চলে যান সোজা নদীর ঘাট। সেখান থেকে যেতে হবে প্রায় আধঘন্টা ইঞ্জিনচালিত নৌকায় করে। খরচ পরবে ৫০০ থেকে ১০০০ টাকার মত। মনে রাখবেন এই নৌকা কিন্তু বনের ভেতর ঢুকবে না। বনে ঢুকতে হবে ডিঙ্গি নৌকা নিয়ে। এই নৌকা আপনাকে বনের পাশে নামিয়ে দেবে। বনে নামার পর কিছুদূর গেলেই চোখে পড়বে ডিঙ্গি নৌকা। কথাবার্তা বলে একটা ঠিক করে নিন। ডিঙ্গি নৌকার ভাড়া পরবে ৬০০ থেকে ১২০০ টাকার মত।
সিলেটের আম্বরখানা মোড় থেকে সিএনজি বা অটোরিকশা করেও যেতে পারেন মোটরঘাট। যেতে সময় লাগবে প্রায় ৩০ থেকে ৪৫ মিনিট। সেখান থেকে নৌকা রিজার্ভ করেও রাতারগুল যেতে পারবেন।
সর্তকতাঃ বর্ষায় বনে জোঁক আর সাপের প্রকোপ বেশি থাকে। তাই সতর্ক থাকবেন। যাঁরা সাঁতার জানেন না, সঙ্গে লাইফ জ্যাকেট রাখতে পারেন। তাছাড়া বনে ঢুকে পানিতে হাত না দেওয়াই ভালো। কারন বিষাক্ত সব সাঁপ এখানে ঘুরে বেড়ায়! নৌকায় বসে কোন গাছের ডালে হাত দিতেও সতর্ক থাকুন।
সিলেটের বাইরে থেকে যারা আসবেন তাদের জন্য আরেকটা সতর্কবানীঃ রাতারগুল থাকা-খাওয়ার কোন ব্যাবস্থা নেই। যাওয়ার সময় হালকা পাতলা কিছু খাবার (চিপস, বিস্কিট, পানি ইত্যাদি) সাথে করে নিয়ে যেতে পারেন। আর থাকার জন্য ফিরে আসতে হবে সিলেটেই।
পরামর্শঃ রোদের জন্য ছাতা নিতে পারেন। তবে দুপুর টাইমে না যাওয়াই ভালো। খুব সকালে গেলে অনেক পাখি দেখতে পারবেন। তাদের কিচিরমিচিরে পরিবেশটা হবে অন্যরকম। আবহাওয়াটাও ঠান্ডা থাকবে। তাছাড়া শেষ বিকেলের দিকেও যেতে পারেন। আস্তে আস্তে সন্ধ্যা হবে তখন গাঁ ছমছমানী ভাব আসবে।





লালাখাল 
 

স্বচ্চ নীল জল রাশি আর দুধারের অপরুপ সোন্দর্য, দীর্ঘ নৌ পথ ভ্রমনের সাধ যেকোন পর্যটকের কাছে এক দূর্লভ আর্কষণ। তেমনি এক নির্জন মনকাড়া স্থান লালাখাল। বাংলাদেশের সবোর্চ্চ বৃষ্ঠিপাতের স্থান এবং রাতের সৌন্দর্যে ভরপুর এই লালাখাল সিলেট জেলার জৈন্তাপুর উপজেলার সন্নিকটে অবস্থিত। সারি নদীর স্বচ্চ জলরাশির উপর দিয়ে নৌকা অথবা স্পীডবোটে করে আপনি যেতে পারেন লালা খালে।যাবার পথে আপনির দুচোখ সৌন্দর্য দেখতে দেখতে ক্লান্ত হয়ে যাবেন কিন্ত সৌন্দর্য শেষ হবে না। ৪৫ মিনিট যাত্রা শেষে আপনি পৌছে যাবেন লালখাল চা বাগানের ফ্যাক্টরী ঘাটে। মুগ্ধ দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকবেন নদীর পানির দিকে। কি সুন্দর নীলএকদম নীচে দেখা যায়।ভারতের চেরাপুঞ্জির ঠিক নিচেই লালাখালের অবস্থান। চেরাপুঞ্জি পাহাড় থেকে উৎপন্ন এই নদী বাংলাদেশের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত।
কিভাবে যাওয়া যায়: 
সিলেট শহর হতে লালাখাল যাবার জন্য আপনাকে পাড়ি দিতে হবে ৩৫ কি.মি রাস্তা। আপনি অনেক ভাবে লালাখাল যেতে পারেন। বাস, মাইক্রো, টেম্পু যোগে আপনি যেতে পারেন।
থাকবেন কোথায়ঃ
লালাখালে থাকার তেমন কোন সুবিধা নাই। সাধারনত পর্যটকরা সিলেট শহর হতে এসে আবার সিলেট শহরে হোটেলে রাত কাটায়। সাম্প্রতিক নাজিমগড় রিসোর্ট নামে একটি বেসরকারী প্রতিষ্ঠান আধুনিক সুযোগ সুবিধা সম্বলিত পিকনিক স্পট গড়ে তোলার কাজ শুরু করেছে।

হযরত শাহজালাল (রঃ) মাজার 
 

হযরত শাহজালাল(র:) ছিলেন উপমহাদেশের একজন বিখ্যাত দরবেশ ও পীর। তিনি ছিলেন ওলিকুল শিরোমণি। সিলেট অঞ্চলে তার মাধ্যমেই ইসলামের প্রসার ঘটে। সিলেটের প্রথম মুসলমান শেখ বুরহান উদ্দিনের ওপর রাজা গৌর গোবিন্দের অত্যাচার এবং এর প্রেক্ষিতে হযরত শাহজালাল(র:) ও তাঁর সফরসঙ্গী ৩৬০ আউলিয়ার সিলেট আগমন ইতিহাসের একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা। এ কারণে সিলেটকে  ৩৬০ আউলিয়ার দেশ বলা হয়। কেউ কেউ সিলেটকে পূণ্যভূমি অভিধায়ও অভিহিত করেন।
আরবের মাটি ও সিলেটের মাটির মিল
কথিত আছে, প্রাচ্য দেশে আসার পূর্বে শাহজালাল(র:) এর মামা মুর্শিদ সৈয়দ আহমদ কবীর (রঃ) তাকে এক মুঠো মাটি দিয়ে বলেন, স্বাদে বর্ণে গন্ধে এই মাটির মতো মাটি যেখানে পাবে সেখানে বসতি স্থাপন করে ইসলাম প্রচার করবে।’ 
হযরত শাহজালাল(র:) বিশিষ্ট শিষ্য শেখ আলীকে এই মাটির দায়িত্বে নিয়োগ করেন এবং নির্দেশ দেন যে, যাত্রা পথে বিভিন্ন জনপদের মাটির সাথে যেন এই জনপদের মাটির তুলনা করে তিনি দেখেন। পরে এই শিষ্যের উপাধি হয় চাষণী পীর। সিলেট শহরের গোয়াইপাড়ায় তার মাজার বিদ্যমান।
সিলেটের মাটির সাথে আরবের মাটির মিল পাওয়ায় হযরত শাহজালাল(র:) সিলেটে বসতি স্থাপন করে ইসলাম প্রচারে মনোনিবেশ করেন। সিলেটে তেল ও গ্যাস পাওয়ায় আরবের মাটি ও সিলেটের  মাটির মিল প্রমাণিত হয়েছে।
কিভাবে যাওয়া যায়: 
সিলেট রেল স্টেশন অথবা কদমতলী বাস স্ট্যান্ড এ নেমে রিকশা বা সিএনজি অটোরিকশাযোগে মাজারে যাওয়া যায়। রিকশা ভাড়া ২০-২৫ টাকা, সিএনজি ভাড়া ৮০-১০০ টাকা।সুরমা নদী পার হয়ে মূল শহরে এসে মাজার এ পৌছাতে হয়। মাজার গেট রোড এ অনেকগুলো আবাসিক হোটেল রয়েছে। 

মালনীছড়া চা বাগান 
 

চা একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় পানীয়। সকালে এক কাপ গরম চা না পেলে বাঙালী সমাজের যেন একদম চলে না। বাংলাদেশের যে কয়টি অঞ্চলে চা বাগান পরিলক্ষিত হয় তার মধ্যে সিলেট অন্যতম। সিলেটের চায়ের রঙ, স্বাদ এবং সুবাস অতুলনীয়। উপমহাদেশের প্রথম চা বাগান সিলেট শহরে অবস্থিত। নাম মালনীছড়া। ১৮৪৯ সালে এই চা বাগান প্রতিষ্ঠিত। বর্তমানে বেসরকারী তত্ত্ত্বাবধানে চা বাগান পরিচালিত হয়ে আসছে। ১৫০০ একর জায়গার উপর এই চা বাগান অবস্থিত।চা বাগানের পাশাপাশি বর্তমানে এখানে কমলা ও রাবারের চাষ করা হয়।
মালনীছড়া চা বাগান ছাড়াও সিলেটে  লাক্ষাতুড়া চা বাগান, আলী বাহার চা বাগান, খাদিম, আহমদ টি স্টেট, লালাখাল টি স্টেট উল্লেখযোগ্য।
অবস্থান: মালনীছড়া এবং লাক্ষাতুড়া চা বাগান দুইটিই সিলেট শহরের উপকন্ঠে অবস্থিত। শহরের কেন্দ্রস্থল জিন্দাবাজার পয়েন্ট হতে গাড়ীতে মাত্র ১৫ মিনিটের পথ।
কি কি দেখবেন: পাহাড়ের গায়ে চা বাগানের দৃশ্য, ছায়া বৃক্ষ, চা শ্রমিকদের আবাসস্থল, কমলার বাগান, রাবার বাগান, চা তৈরীর প্রক্রিয়া।
কোথায় অবস্থান করবেন: সাধারনত চা বাগানে থাকার তেমন কোন সুব্যবস্থা নাই। আপনাকে সিলেট শহরেই থাকতে হবে।
কিভাবে যাওয়া যায়: 
সিলেট শহর থেকে রিকশাযোগে অথবা অটোরিকশা বা গাড়িতে বিমানবন্দর রোডে চাবাগানটি পাওয়া যাবে। গাড়িতে যেতে আম্বরখানা পয়েন্ট থেকে ১০ মিনিট এর পথ।রিকশাযোগে যেতে আধঘন্টা লাগবে। 

ব্রন ও ব্রনের কালো দাগ থেকে মুক্তির কিছু উপায়(১-২ মাসের মধ্যে)




খাদ্য হিসেবে ও চিকিত্‍সার কাজে গাছের বিভিন্ন অংশ এবং ভেষজের ব্যবহার মানুষ করে আসছে সেই সুপ্রাচীনকাল থেকেই। প্রাচীন চিকিত্‍সাশাস্ত্র আয়ুর্বেদ পুরোটাই গাছ-গাছড়া নির্ভর। প্রাচীন চীনের চিকিত্‍সাশাস্ত্রেও ছিল ভেষজের ব্যবহার। মধ্যপ্রাচ্যে বিশেষ করে যাযাবর শ্রেণীর লোকেরা টোটকা চিকিত্‍সাতে নানা ধরনের শেকড়-বাকড় ব্যবহার করত। শুধু কি খাবার আর চিকিত্‍সা! রূপচর্চার ক্ষেত্রেও রয়েছে ভেষজ উপাদানের অবদান। নিজেকে সুন্দর ও আকর্ষণীয় করে তুলতে সুদূর অতীত থেকে আজ পর্যন্ত ভেষজ উপাদানের ব্যবহার সমানভাবে চলে আসছে। পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া একেবারে নেই বললেই চলে বলে রূপচর্চার ক্ষেত্রে আয়ুর্বেদ বা ভেষজের ব্যবহারে মানুষ দিন দিন আগ্রহী হয়ে উঠছে।
ত্বকের মরা কোষ, ময়লা,দূষণ এবং শারীরিক নানা সমস্যার কারণে আমাদের ত্বক বিভিন্নভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ধুলা ময়লা ত্বকে জমে রোমকূপ বন্ধ করে ফেলে। ফলে সৃষ্টি হয় ব্রণের। বিশেষ করে ত্বকে তেলের পরিমাণ বেশি থাকলে তা সহজেই ময়লা আকর্ষণ করে। তাই তৈলাক্ত ত্বকে ব্রণের সংক্রমণ বেশি হয়। অনেকেই নোংরা হাতে ব্রণ খুঁটে থাকেন। এটা একেবারেই উচিত নয়, এতে ত্বকে দীর্ঘস্থায়ী ক্ষত সৃষ্টি হয় এবং দাগ পড়ে যায়। ত্বকের সামান্য যত্ন নিলেই ব্রণের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব। রইল ব্রণের হাত থেকে নিস্তার পাবার কিছু ভেষজ উপায় -

১) ব্রণ হবার একটি অন্যতম কারণ হলো অপরিষ্কার ত্বক। তাই ত্বক রাখতে হবে পরিষ্কার। নিয়মিত স্ক্রাবিং ত্বককে পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে। ব্রণ শুধু মুখে নয়, শরীরের অন্যান্য অংশেও হতে পারে। তাই স্ক্রাবিং পুরো দেহের জন্যই প্রযোজ্য। পাকা পেঁপে চটকে নিন এক কাপ। এর সাথে মেশা এক টেবিল চামচ পাতিলেবুর রস এবং প্রয়োজন অনুযায়ী চালের গুঁড়ো। মিশ্রণটি মুখসহ পুরো শরীরে লাগান। ২০-২৫ মিনিট মাসাজ করে গোসল করে ফেলুন। পেঁপে ছাড়াও ব্যবহার করতে পারেন ঘৃতকুমারীর রস।

২)পুদিনা পাতা ত্বকের অতিরিক্ত তেল এবং ব্রণের সংক্রমণ কমাতে খুবই উপকারী। টাটকা পুদিনা পাতা বেটে ত্বকে লাগান। ১০-১৫ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। এতে ত্বকের অতিরিক্ত তেল দূর হয়ে যাবে। অতিরিক্ত গরমের কারণে ত্বকে যেসব ফুসকুড়ি এবং ব্রণ হয় সেগুলো দূর করতেও পুদিনা পাতা উপকারী। টাটকা পুদিনা পাতা বেটে ব্রণের ওপর লাগিয়ে রাখুন ২০ মিনিট এরপর ধুয়ে ফেলুন।
৩)পুদিনা পাতার রস করে নিয়ে সেটা দিয়ে আইস কিউব তৈরি করুন। ফুসকুড়ি ও ব্রণের এই আইস কিউব ঘষুন ১০-১৫ মিনিট। এতে ফুসকুড়ি ও ব্রণের সংক্রমণ তো কমবেই সাথে ত্বকের জ্বালাপোড়াও দূর করবে।
৪) লবঙ্গ মূলত মসলা হিসেবে পরিচিত হলেও ব্রণ সারাতে তা খুবই কার্যকর। লবঙ্গের তেল দিয়ে ত্বক মাসাজ করা খুবই উপকারী। ত্বকে ব্রণের সংক্রমণ বেড়ে গেলে লবঙ্গ গুঁড়ো করে তাতে গোলাপজল মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। ব্রণের জায়গাগুলোতে মিশ্রণের মোটা প্রলেপ দিন। ২০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন।
৫) টক স্বাদের কদবেল খেতে অনেকেই ভালবাসেন। কাঁচা কদবেলের রস ব্রণের জন্য খুবই উপকারী। কাঁচা কদবেলের রস তুলাতে ভিজিয়ে ব্রণ আক্রান্ত জায়গাগুলোতে লাগান। ১০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন।

৬) নিমপাতা খুব ভালো জীবাণুনাশক। তাই ব্রণ সারাতে নিমপাতা খুবই উপকারী। নিমপাতা বেটে সাথে চন্দনের গুঁড়া মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। এই পেস্ট ত্বকে লাগিয়ে ১৫-২০ পর ধুয়ে ফেলুন।
৭) যাঁদের ব্রণের পরিমাণ অত্যধিক বেশি তাঁরা পাতিলেবুর রস দিনে দুই তিনবার ব্রণে আক্রান্ত জায়গাগুলোতে লাগান। তবে একটানা ১০ মিনিটের বেশি রাখবেন না। ১০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।
৮)ধনিয়াপাতাও ব্রণ সারাতে কার্যকর। ধনিয়াপাতা বেটে তাতে কয়েক চিমটি হলুদ গুঁড়া মেশান। মিশ্রণটি ত্বকে লাগিয়ে ২০-২৫ পর ধুয়ে ফেলুন।
৯) ১ লিটার পানিতে ২৫০ গ্রাম টাটকা নিমপাতা জ্বাল দিন। পানির পরিমাণ অর্ধেক না হওয়া পর্যন্ত জ্বাল দিতে থাকুন। এই পানি ছেঁকে ঠান্ডা করে ফ্রিজে সংরক্ষণ করুন। প্রতিদিন সকালে খালি পেটে এই পানি পান করলে ব্রণ হবার সম্ভাবনা অনেকাংশে কমে যাবে।
১০)গোলাপজলের নিয়মিত ব্যবহারে ব্রণের দাগ কমে যায়। দারুচিনি গুঁড়ার সাথে গোলাপজল মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। এই পেস্ট ব্রণের ওপর লাগিয়ে ২০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। এতে ব্রণের সংক্রমণ, চুলকানি এবং ব্যথা অনেকটাই কমে যাবে।
এছাড়া :

ব্রণ সমস্যা চিরতরে দূর করবে যে ৬টি খাবার : ব্রণের সমস্যায় ভোগেননি বা ভুগছেন না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। ছেলে মেয়ে উভয়েই ব্রণের সমস্যায় পড়তে পারেন যে কোনো কারণে। ব্রন যে কোনো ধরণের ত্বকেই হতে পারে। এই ব্রণের সমস্যা দূর করার জন্য কত কিছুই না করেন সবাই। কিন্তু কতোটুকু কার্যকর হয় এত কিছু করা? কত ধরণের ক্রিম বা চিকিৎসা নেয়া হয়, কত রূপচর্চা আর পার্লারে দৌড়া দৌড়িও হয়। কিন্তু আসলেই কি এই নাছোড়বান্দা ব্রণের পিছু ছাড়ানো যায়?
আচ্ছা, যদি ব্রণের সমস্যাকে নির্মূল করা যায় দেহের ভেতর থেকে, তাহলে কেমন হয়? খুব সহজেই দূর হবে ব্রণের উপদ্রব কিছু খাবারের মাধ্যমে। হ্যাঁ, প্রকৃতি তার অনেক কিছুর মাঝেই অনেক সমস্যার সমাধান রেখে দিয়েছে। দরকার শুধু এগুলোকে খুঁজে বের করা ও কাজে লাগানো।
আজ আপনাদের জন্য রইল ব্রণের সমস্যাকে চিরবিদায় জানানোর জন্য যে খাবারগুলো সাহায্য করবে তার একটি তালিকা। মৌসুম অনুযায়ী প্রতিদিন খাবার তালিকায় এই খাবারগুলো থেকে ব্রন সমস্যার সমাধান করুন সহজেই।

 শসা 
শসায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, সি, ই, পানি এবং অ্যামিনো অ্যাসিড। যা ত্বকে ব্রণের ব্যাকটেরিয়ার জন্ম প্রতিরোধ করে ব্রণের সমস্যার সমাধানে সহায়তা করে। শসার জুস করেও খেতে পারেন। এতে ত্বকে ব্রণের সমস্যা দূর করে ত্বক উজ্জ্বল করবে।
তাজা সবুজ শাক
হজম ক্রিয়ায় সমস্যা বা বদহজম হলে ব্রণের উপদ্রব বাড়ে। তাই আমাদের খেতে হবে হজমে সাহায্যকারী সবুজ শাক যেমন, লেটুস, পালংশাক, বাঁধাকপি, ডাটা শাক ইত্যাদি। এই সবুজ শাক হজমের ক্রিয়ায় সাহায্য করে এবং ব্রণের সমস্যার সমাধান করে।
কাঁচা রসুন
গন্ধের জন্য কাঁচা রসুন কেউ খেতে চান না। কিন্তু কাঁচা রসুনে যে অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান আছে তা রক্ত শোধনে কাজ করে ও দেহের ইমিউন সিস্টেম উন্নত করে। ফলে ব্রণের আক্রমণ থেকে রক্ষা পায় ত্বক। দিনে অন্তত ১ কোয়া কাঁচা রসুন খাবার অভ্যাস করুন।
টমেটো
টমেটোতে বিদ্যমান প্রচুর পরিমাণে সি যা ব্রণের সমস্যার সমাধানে কাজ করে। এছাড়াও টমেটোর বায়োফ্লেভানয়েডস ক্ষতিগ্রস্থ ত্বকের কোষ সুস্থ করে। এতে করে ত্বকে ব্রণের জন্য সৃষ্ট ক্ষতের দাগ দূর করতেও সাহায্য করে। 
গ্রিন টী
/ কফি আমরা প্রতিদিনই পান করি একটি রিফ্রেসিং এবং এনার্জি ড্রিংক হিসেবে। কিন্তু ব্রণ দূর করতে চাইলে প্রতিদিন চা/ কফি পান করার অভ্যাস বদলে গ্রিন টী পান করার অভ্যাস করুন। গ্রিন টী দেহের টক্সিক পদার্থ দূর করতে সাহায্য করে এবং ব্রণ হওয়ার জন্য দায়ী ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করতে সহায়তা করে।
অলিভ অয়েল
খাবারে আমরা বেশিরভাগ সময়ই সয়াবিন তেল ব্যাবহার করি। মাঝে মাঝে সরিষার তেল ব্যবহার করা হয়। কিন্তু সয়াবিন ও সরিষার তেল ব্রণ হওয়ার জন্য দায়ী। আজ থেকে যতটা সম্ভব সয়াবিন ও সরিষার তেল এড়িয়ে চলুন। খাবারে ব্যবহার করুন অলিভ অয়েল। অলিভ অয়েল দেহে খুব সহজে হজম হয় এবং ইমিউন সিস্টেম উন্নত করতে সাহায্য করে। এর সাথে সাথেই ব্রণের সমস্যারও সমাধান করে অলিভ অয়েল।

ব্রণ দূর করতে চারটি দারুণ কার্যকরী ফেসপ্যাক : সত্যি বলতে কি, ব্রণের চিকিৎসায় কেনা কসমেটিক উপাদান ব্যবহার না করাই ভালো। যতটা সম্ভব রাসায়নিক উপাদান এড়িয়ে গিয়ে প্রাকৃতিক উপাদানের নিয়মিত ব্যবহারেই ব্রণহীন সুন্দর ত্বক পাওয়া সম্ভব। ভালো খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলুন, পর্যাপ্ত ঘুমান, দুশ্চিন্তা মুক্ত থাকুন এবং ত্বক অবশ্যই খুব পরিষ্কার রাখুন। দিনে দুবার ফেসওয়াশ ব্যবহার করে মুখ ধোবেন। এছাড়াও শুধু পানি দিয়ে ৩ থেকে ৪ বার মুখ অবশ্যই ধুয়ে নেবেন। এর পাশাপাশি, ব্রণ নিরাময় করতে ব্যবহার করতে পারেন কিছু কার্যকরী ফেসপ্যাক।
কমলার খোসা কমাবে ব্রণ
কমলা লেবুর খোসা শুকিয়ে মিহি গুঁড়ো করে নিন। চন্দন পাউডার, মুলতানি মাটি, কমলালেবুর খোসার গুঁড়ো মিশিয়ে ভালো করে মিলিয়ে নিন। এই মিশ্রণের মধ্যে দুই চামচ দুধও মিশিয়ে নিতে পারেন। মুখে লাগিয়ে কিছুক্ষণ রাখার পর ধুয়ে নিন। এই প্যাকটা নিয়মিত ব্যবহারে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়বে, ব্রণের উপদ্রব কমবে, ব্রণের দাগও দূর হয়ে যাবে।
নিম ঠেকায় ব্রণ
চার/পাঁচটা নিম পাতা ভালো করে ধুয়ে পিষে নিন। এর মধ্যে এক চামচ মুলতানি মাটি, অল্প গোলাপ জল মিশিয়ে প্যাক তৈরি করুন। প্যাকটা যদি গাঢ় হয়ে যায় তাহলে এর মধ্যে গোলাপ জল মিশিয়ে নিন। মুখে লাগিয়ে বেশ কিছুক্ষণ রেখে দিন। প্যাকটা মুখে শুকিয়ে গেলে হালকা পানি দিয়ে মুখটা ধুয়ে ফেলুন। মুখে ব্রণ থাকলে দ্রুত সেরে যাবে। ব্রণ অথাও কমাবে।
লবঙ্গ দারুণ ফলদায়ক
লবঙ্গ মূলত মসলা হিসেবে পরিচিত হলেও ব্রণ সারাতে তা খুবই কার্যকর। লবঙ্গের তেল দিয়ে ত্বক মাসাজ করা খুবই উপকারী। ত্বকে ব্রণের সংক্রমণ বেড়ে গেলে লবঙ্গ গুঁড়ো করে তাতে গোলাপজল মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। ব্রণের জায়গাগুলোতে মিশ্রণের মোটা প্রলেপ দিন। ২০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন।
আলোভেরা মানিয়ে যায় সব ধরণের ত্বকে
আলোভেরা রস নিন নিন এক কাপ। এর সাথে মেশাণ এক টেবিল চামচ পাতিলেবুর রস এবং প্রয়োজন অনুযায়ী চালের গুঁড়ো। মিশ্রণটি মুখসহ পুরো শরীরে লাগান। ২০-২৫ মিনিট মাসাজ করে গোসল করে ফেলুন।

ব্রণ নিরসনের ঘরোয়া উপায়আমাদের ত্বকের তৈল গ্রন্থি ব্যাটেরিয়া দ্বারা আক্রান্ত হলে এর আকৃতি বৃদ্ধি পায় তখন এর ভিতরে পুঁজ জমা হতে থাকে, যা ধীরে ধীরে বর্ন পরিবর্তন করে ব্রণের আকার ধারণ করে। এটা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বংশগত। ব্রণকে অনেকেই পিম্পল , যিট বা স্পট বলে থাকে।
সাধারণত টিনেজারাই ব্রণের সমস্যায় বেশি ভোগে। বাজারে ব্রণ দূর করার জন্য নানারকম কসমেটিক্স/ঔষধ পাওয়া যায়। সেগুলো ব্যবহার করারআগে নিচের ঘরোয়া পদ্ধতিগুলো অনুসরন করতে পারেন।
ঘরোয়া পদ্ধতি্তে ব্রণ এবং ব্রণের দাগ দুর করার কিছু সহজ উপায়ঃ

১। কাঁচা হলুদ এবং চন্দনকাঠের গুঁড়ো ব্রণের জন্য খুবই কার্যকর দুটো উপাদান। সমপরিমাণ বাটা কাঁচা হলুদ এবং চন্দন কাঠের গুঁড়ো একত্রে নিয়ে এতে পরিমাণ মত পানি মিশিয়ে পেষ্ট তৈরি করতে হবে।মিশ্রণটি এরপর ব্রণ আক্রান্ত জায়গায় লাগিয়ে রেখে কিছুক্ষন পর শুকিয়ে গেলে মুখঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।
এই মিশ্রণটি শুধুমাত্র ব্রণদূর করার কাজ করে না বরং ব্রণের দাগ দূর করতেও সাহায্য করে।
২। আপেল এবং মধু এর মিশ্রণ হচ্ছে ব্রণের দাগ দূর করার সবচেয়ে জনপ্রিয় ঘরোয়া পদ্ধতি। প্রথমে আপেলের পেষ্ট তৈরি করে তাতে ৪-৬ ফোঁটা মধু মিশাতে হবে। মিশ্রণটি মুখে লাগিয়ে কিছুক্ষন অপেক্ষা করে এরপর মুখ ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলতে হবে। এটি ত্বকের টানটান ভাব বজায় রাখে এবং কমপ্লেকশন হালকা করে। সপ্তাহে ৫-৬ বার এটি ব্যবহার করা যেতে পারে। আপনি কয়েকদিনের মধ্যে পরিবর্তনটা অনুভব করতে পারবেন।
৩। ব্রণের জন্য তুলসি পাতার রস খুব উপকারী। কারণ তুলসি পাতায় আছে আয়ূর্বেদিক গুণ। শুধুমাত্র তুলসি পাতার রস ব্রণআক্রান্ত অংশে লাগিয়ে রেখে শুকিয়ে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। এরপর কুসুম গরমপানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলতে হবে।

৪। প্রথমে চন্দন কাঠের গুড়োঁর সাথে গোলাপ জল মিশিয়ে পেষ্ট তৈরি করুন। এরপর এতে ২-৩ ফোঁটা লেবুর রস মিশাণ। গোলাপজল অনেকের ত্বকের সাথে এডজাষ্ট হয় না।তারা সেইক্ষেত্রে গোলাপ জলের পরিবর্তে মধু ব্যবহার করতে পারেন।এই পেষ্ট আপনার ব্রণের দাগ দূর করতে সাহায্য করবে।সপ্তাহে ৩-৪দিন ব্যবহার করতে পারলে ভাল ফল পাওয়া যাবে।
৫। এছাড়া রাতে শোয়ার আগে ডিমের সাদা অংশ ব্রণ আক্রান্ত জায়গায় মেসেজ করে সারারাত রাখতে পারেন।এটি আপনার ত্বকের খসখসে ভাব দূর করে।সবচেয়ে ভাল হয় যদি এর সাথে লেবুর রস যোগ করা যায়।আপনি এটি সারারাতও রাখতে পারেন আবার আধ ঘন্টা পরও ধুয়ে ফেলতে পারেন।
৬। প্রতিদিন ৯-১০ গ্লাস পানি খাবেন।
৭। প্রতিদিন রাতের খাবারের পর যেকোন ধরনের মৌসুমি ফল খান। এটি আপনার ত্বককে সতেজ রাখবে।যতটা সম্ভব তেলযুক্ত বা ফাষ্টফুড জাতীয় খাবার পরিহার করুন।
৮। সবসময় বাহির থেকে আসা মাত্র মুখ ফেসওয়াস দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এছাড়া হালকা গরম পানির স্টীম নিতে পারেন।এতেকরে ত্বকে জমে থাকা ধুলোবালি পরিষ্কার হয়ে যাবে।
ব্রণের মহোঔষধ “জায়ফল”
জায়ফল– রন্ধন শিল্পে যারা পারদর্শী তাদের কাছে অতিপরিচিত একটি মসলার নাম। খাবারের স্বাদ আর সুগন্ধ বৃদ্ধিতে আর মাংস নরম করতে যার কোন জুড়ি নেই। এবার আসি জায়ফলের একটি যুগান্তকারী গুনের কথায়। সেই গুণটি হলো মুখের ব্রণের চিকিৎসায় এর ব্যবহার।

জায়ফলের মধ্যে “মেইস” নামক একটি উপাদান আছে, যা ফাংগাস এবং ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধী। ব্রণের মূল কারণ হলো মুখের ত্বকে ব্যাকটেরিয়া এবং ফাংগাসের আক্রমণ। সুতরাং বুঝতেই পারছেন জায়ফল কিভাবে ব্রণের বিরুদ্ধে কাজ করে।
প্রথমে একটি বাটিতে জায়ফল গুড়া, মধু এবং একটু দুধ নিন।এবার ভালোকরে এগুলো এমনভাবে মেশান যেন তা পেস্টের মতো হয়।এইরকম পেস্ট বানিয়ে প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর আগে ব্রণে আক্রান্ত জায়গাগুলোতে ভালভাবে লাগান।পরদিন সকালে হালকা ভাবে মুখ ধুয়ে ফেলুন।এভাবে প্রতিদিন ব্যবহারে আপনি নিজেই ফলাফল টের পাবেন। এই পেস্টটিকে আপনি স্পট ক্রিম হিসাবে মুখের দাগ দূর করতেও ব্যবহার করতে পারেন
তবে যারা বহুদিন যাবত ব্রণ সমস্যায় ভুগছেন এবং কোন কিছুতেই কাজ হচ্ছে না, তারা আর দেরি না করে কোন অভিজ্ঞ ডাক্তারের শরণাপন্ন হোন।
লিখাটা আপনাদের কেমন লাগলো তা জানার অপেক্ষায় রইলাম,আপনাদের মতামত আমাদের কাম্য।ইমেইল করে বা কমেন্টস এ আপনাদের কোনো জিজ্ঞাসা থাকলে আমাদের জানাতে পারেন। আমরা যতটুকু পারি আপনাদের সাহায্য করার চেষ্টা করব। ভালো থাকুন , সুস্থ থাকুন আর আমাদের সাথেই থাকুন।

Sunday, August 30, 2015

রাঙ্গামাটি- সৌন্দর্য যার প্রধান কথা

নৈসর্গিক সৌন্দর্যের এক অপার লীলাভূমি রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা। এখানে পাহাড়ের কোল ঘেঁসে ঘুমিয়ে থাকে শান্ত জলের হ্রদ। সীমানার ওপাড়ে নীল আকাশ মিতালী করে হ্রদের সাথে, চুমু খায় পাহাড়ের বুকে। এখানে চলে পাহাড় নদী আর হ্রদের এক অপূর্ব মিলনমেলা। চারিপাশ যেন পটুয়ার পটে আঁকা কোন জল রঙের ছবি। কোন উপমাই যথেষ্ট নয় যতটা হলে বোঝানোয় যায় রাঙ্গামাটির অপরূপ সৌন্দর্য। এখানকার প্রতিটি পরতে পরতে লুকিয়ে আছে অদেখা এক ভূবন যেখান আপনার জন্য অপেক্ষা করছে নয়ানাভিরাম দৃশ্যপট।

রাঙ্গামাটিতে ভ্রমন করার জন্য রয়েছে অনেকগুলো দর্শনীয় স্থান। এর মধ্যে কাপ্তাই লেক, পর্যটন মোটেল, ডিসি বাংলো, ঝুলন্ত ব্রিজ, পেদা টিংটিং, সুবলং ঝর্না, রাজবাড়ি, রাজবন বিহার, উপজাতীয় জাদুঘর, কাপ্তাই হাইড্রো ইলেক্ট্রিক প্রজেক্ট, কাপ্তাই জাতীয় উদ্যান ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।


এখানকার দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে কাপ্তাই হ্রদ ভ্রমন অন্যতম। কর্ণফুলী নদীতে বাঁধ নির্মানের ফলে সৃষ্টি হয় সুবিশাল কাপ্তাই হ্রদ। মূলত পানি বিদ্যুত উৎপাদনের জন্য এই বাঁধ নির্মিত হয়। অসংখ্য পাহাড়ের কোল ঘেঁষে বয়ে চলা আঁকাবাঁকা বিশাল কাপ্তাই হ্রদে নৌবিহারে অনুভূতি এক অনন্য অভিজ্ঞতা। দেশীয় ইঞ্জিন নৌকা,লঞ্চ, স্পিডবোটে দিনভর নৌবিহার করা যেতে পারে। মজার ব্যাপার হলো আপনি চাইলে এই হ্রদ ঘুরতে ঘুরতেই দেখে ফেলতে পারবেন রাঙ্গামাটির অন্যান্য দর্শনীয় স্থানগুলো। রাঙ্গামাটি শহরের বিভিন্ন জায়গা থেকে আপনি ট্রলার বা বোট ভাড়া করতে পারবেন।  পর্যটন থেকেও বোট ভাড়া করা যায়, তবে রেট একটু বেশি। রিজার্ভ বাজার থেকে বোট বা ট্রলার ভাড়া করলে একটু কম দামে পাওয়া যাবে। তবে পর্যটনের বোট বা ট্রলারের মতো দেখতে সুন্দর না বলে অনেকে সেগুলো ভাড়া নিতে চান না।

কাপ্তাই হ্রদ ভ্রমনের জন্য একটু ভোরে ভোরে রওয়ানা হওয়াই উত্তম। হ্রদের মাঝখান দিয়ে নৌভ্রমন আপনার মনে এমনই এক সুখস্মৃতি তৈরি করবে যা আপনি কখনোই ভূলতে পারবেন না। যে দিকে তাকাবেন কেবল পানি আর তার মাঝে মাঝে ছোট ছোট টিলা। লাল মাটির টিলাগুলোর গাঁয়ে সবুজের সমারোহ, যেন এগুলো ঢেকে আছে সবুজ কার্পেটে। অসহ্য সুন্দর যে দৃশ্য। কখনো ডানে কখনো বামে আবার কখনো বা মনে হবে সম্মুখে সীমাহীন পথ। এখানে জল, পাহাড় আর আপনি ছাড়া আর কিছুই নেই চারিদিকে। এ এক অসাধারন অনুভুতি। কখনো কখনো বেশ বড় বড় পাহাড় আপনার চোখে পড়বে। এর দৃষ্টিনন্দন শীলা খন্ড আপনার নজর কাড়বেই। মন চাইবে উড়াল দিয়ে চলে যাই সেখানে। চাইলে অবশ্য যেতেও পারেন। একটু কষ্টসাধ্য- এই আর কি।

ঝুলন্ত ব্রিজ ও পর্যটন মোটেল


রাঙ্গামাটি শহরের শেষ প্রান্তে কাপ্তাই হ্রদের তীর ঘেঁষে অবস্থিত সরকরি পর্যটন মোটেল। পর্যটকদের জন্য খুবই দৃষ্টিকাড়া ও আকর্ষনীয় স্থান এটি। পর্যটন মোটেলেই অবস্থিত ঝুলন্ত ব্রিজটি, যা পর্যটন এলাকাকে আরও বেশি সুন্দর ও দৃষ্টিনন্দিত করেছে। সহজেই পর্যটকদের দৃষ্টি কাড়ে এটি। পর্যটকদের প্রধান আকর্ষনের কারনে এবং এর নির্মানশৈলির কারনে ঝুলন্ত ব্রিজ আজ রাঙ্গামাটির নিদর্শন হয়ে দাড়িয়ে আছে। পর্যটকরা সাধারণত প্রথমেই এই পর্যটন মোটেল এবং ঝুলন্ত ব্রিজে আসে। এখান থেকে শুরু হয় রাঙামাটি ভ্রমণ। এখানে পর্যটনের বোট ভাড়া পাওয়া যায়। এই বোট ভাড়া নিয়ে কাপ্তাই হ্রদে ভ্রমণ করতে করতে যাওয়া যায় সুভলং, পেদা টিং টিং, টুকটুক ইকো ভিলেজ, চাং পাং, বৌদ্ধ মন্দির, কাপ্তাই শহর সহ নানা জায়গায়। এক দিনে সব জায়গায় যাওয়া সম্ভব নয়। সন জায়গায় ঘুরতে চাইলে রাঙামাটিতে থাকতে হবে ২/৩ দিন। 



পেদা টিং টিং + চাং পাং
কাপ্তাই হ্রদের চারিদিকে কেবল পাহাড় আর হ্রদ, যেন প্রকৃতির মাঝে আপিন এক আগন্তুক মাত্র। বুনো প্রকৃতি ছাড়া আর কিছুই আশা করা যায় না এখানে। কিন্তু আপনি অবাক হবেন যখন চলতি পথে কোন একটি টিলার উপর দেখবেন পেদা টিং টিং এবং চাং পাং। এমন এক পরিবেশে যেখানে আপনি এক গ্লাস খাবার পানি পাবেন না, সেখানে এই দুইটি রেষ্টুরেন্ট আপনার জন্য চা, কফি আর চিকেন ফ্রাই নিয়ে অপেক্ষা করছে। সত্যিই হতবাক করার মত ব্যাপার। এছাড়াও এখানে পাবেন স্থানীয় খাবার "বিগল বিচি", "কচি বাঁশের তরকারী", "কেবাং"। পেদা টিং টিং একটা চাকমা শব্দগুচ্ছ, যার অর্থ হচ্ছে পেট টান টান। অর্থাৎ মারাত্মকভাবে খাওয়ার পর পেটের যে টান টান অবস্থা থাকে, সেটাকেই বলা হয় পেদা টিং টিং। রাঙ্গামাটি শহর থেকে মাত্র ৪-৫ কিলোমিটার দূরে কাপ্তাই হ্রদের ভসমান একটি পাহাড়ে অবসথিত এই পর্যটন সংস্থা। এখানে রেস্তোরা, কটেজ, নৌবিহার ব্যবস্থা, সেগুন বাগান ও অসংখ্য বানর রয়েছে। ইচ্ছে করলে মনোজ্ঞ কোন অনুষ্ঠানও আয়োজন করা যায়। শুধু তাই নয় আপনি চাইলে রাত্রিযাপনও করতে পারবেন। এখানে থাকার জন্য রয়েছে বেশ কয়েকটি কক্ষ সদৃশ ঘর।

টুকটুক ইকো ভিলেজ


চারিদিকে পানি বেষ্টিত শান্ত একটি দ্বীপের মত এই টুকটুক ইকো রিসোর্ট। নানা ধরনের গাছ এবং ফুলের সমারোহ আছে এখানে। এখানে এসে পৌছলেই একধরনের শান্তি উপভোগ করবেন। রাঙামাটিতে গেলে কখনই এক দিনে পুরোটা ঘুরে শেষ করতে পারবে না কেউ। এক রাত থাকতেই হবে আপনাকে। রাত কাটানোর কাজটা আপনারা সেরে নিতে পারেন এই টুকটুক ইকো ভিলেজেই। এখানে কয়েকটি রিসোর্ট গড়ে তোলা হয়েছে। সবগুলো রিসোর্টই পাহাড়ের কিনারায় কাঠের ভিত্তির উপড় তৈরী (ছবিতে দেখবেন)। ধারনা করছি সেগুলো খুবই সাধারন। প্রতি রুম ১ হাজার টাকায় ভাড়া দেওয়া হয়। এক রুমে ৩ জন পর্যন্ত থাকতে পারবেন। সুতরাং তুলনামুলক অনেক সস্তা। এই সব রিসোর্টে ইলেক্টট্রিসিটির ব্যবস্থা করা হয়েছে সোলার এনার্জির মাধ্যমে। রাখা আছে জেনারেটর ও।



সুবলং ঝরনা

রাঙ্গামাটির অন্যতম সুন্দর দর্শনীয় স্থান এটি। চমৎকার একটি জলপ্রপাত এই স্থানকে দিয়েছে ভিন্ন একটি চরিত্র। রাঙ্গামাটি শহর থেকে ১০-১২ কিলোমিটার দূরে অবসথিত মনোরম এই ঝরনাটি। এ ঝর্নার রূপ আপনাকে মোটেও আশাহত করবে না। সময়টি যদি হয় বর্ষাকাল তবে আপনি সত্যিই ভাগ্যবান বলতে হবে। কেননা এই সময় ঝর্না হয়ে উঠে নবযৌবনা, সয়ম্বরা। অপলক দৃষ্টিতে সে ঝর্নার রূপ আপনি দেখবেন সম্মোহিত হয়। এই স্থানটি বেশ সাজানো গোছানো। ফুলের বাগান, উচু বসার স্থান এবং হাটার জন্য ব্রিজ ও রাস্তা আপনাকে বিমোহিত করবে। ঝর্নাস্নান কিংবা দর্শন শেষে আপনি সামনে এগিয়ে গেলে পাবেন সুবলং বাজার। হ্রদের তীরে অবস্থিত স্থানীয় এই বাজারে রয়েছে একটি সেনা ক্যাম্প। বাজারটি একেবারে ছোট নয়। এখানকার খাবার বেশ সুস্বাদু। দুপুরের খাবারটি চাইলে এখানে সেরে নিতে পারেন। হ্রদ থেকে ধরা মাছের ঝোল আর আলুভর্তা রসনা বিলাসের জন্য মন্দ নয়। তবে সাবধান- এই এলাকায় প্রায়শই বন্য হাতির হামলা হয়ে থাকে। তাই চোখ কান একটু খোলা রাখাই শ্রেয়।


** সুভলং যাওয়া আসার পথেই পড়বে পেদা টিং টিং, চাং পাং এবং টুকটুক ইকো রিসোর্ট। পর্যটন থেকে পেদা টিং টিং, চাং পাং এবং টুকটুক ইকো রিসোর্ট হয়ে সুভলং ঘুরে আবার পর্যটন আসতে ৫-৬ জনের একটা সুন্দর বোটে খরচ পড়বে ১১০০-১২০০ টাকা।

রাজবন বিহার
রাজবাড়ির পাশেই আন্তর্জাতিক খ্যাত এই বৌদ্ব ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানটি অবস্থিত। এখানে অবস্থান করেন বৌদ্ব আর্য পুরুষ শ্রাবক বুদ্ধু সর্বজন পূজ্য শ্রীমৎ সাধনানন্দ মহাসহবির বনভান্তে। এই বৌদ্ব বিহারে প্রত্যেক বছরের কঠিন চীবর দানোৎসবে লক্ষাধিক মানুষের সমাগম ঘটে। এছাড়া প্রতিদিন অসংখ্য দর্শনাথী ও পুণ্যানর্থীর ভিড়ে মুখরিত থাকে রাজবন বিহার এলাকা। এটি বর্তমানে বাংলাদেশের প্রধান বৌদ্ব ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান। বেশ কয়েকটি বৌদ্ব মন্দির, বিশ্রামগার, হাসপাতাল, তাবতিংস স্বর্গসহ অনেক কিছু রয়েছে দেখার মত।

রাজবাড়ি
রাঙ্গামাটি শহরেই অবসথিত রাজবাড়ি। চাকমা সার্কেল চিফ রাজা ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায় ও তার মা রানী আরতি রায় এ রাজবাড়িতে থাকেন বর্তমানে। চারদিকে হ্রদ বেষ্টিত এই রাজবাড়ি পুরনো হলেও দেখতে ও বেড়াতে ভীষন ভাল লাগে। রাজদরবার, কাচারি, সজ্জিত কামানসহ দেখার মতো অনেক কিছু আছে। রাজবাড়ীর নিরিবিলি পরিবেশ, সবুজ বাঁশের ঝাড় আর পাখির কলকাকলি আপনাকে মহুর্তের জন্য অঁচল করে দেবে। রাজবাড়ীর পাশেই উপজাতীয় নারীরা তাদের হাতে বুনা বস্ত্র সম্ভার নিয়ে বসে থাকে বিকিকিনির জন্য। এসব পন্য আপনার প্রয়োজনের পাশাপাশি মেটাবে রুচির তৃষ্ণা।

উপজাতীয় জাদুঘর
রাঙ্গামাটি শহরের প্রধান রাস্তার পাশেই এই জাদুঘরটি স্থাপিত হয়েছে। উপজাতীয় কৃষ্টি,সংস্কৃতি, জীবনধারার নানান নদর্শন ও ব্যিবহার্য জিনিসপত্র এখানে রাখা হয়েছে এখানে।

যেভাবে যেতে হবে
ঢাকা এবং দেশের বিভিন্ন স্থান হতে রাঙ্গামাটি পর্যন্ত সরাসরি বাস সার্ভিস চালু রয়েছে। ঢাকা হতে বেশ কয়েকটি বাস প্রতিদিন ছেড়ে যায় রাঙ্গামাটির উদ্দেশ্যে। শ্যামলী, সায়েদাবাদ, কলাবাগান হতে প্রতিদিনই গ্রীনলাইন, এস.আলম, ইউনিক সার্ভিস বাসগুলো ছাড়ে। এগুলোর মাধ্যমে সরাসরি চলে যেতে পারেন রাঙ্গামাটি; ভাড়া জনপ্রতি ৪৫০ টাকা মত। অথবা ঢাকা বা অন্য জেলা হতে বাস, ট্রেনে কিংবা বিমানে করে যেতে পারেন চট্টগ্রাম। চট্টগ্রামের অক্সিজেন মোড় হতে লোকাল এবং পাহাড়িকা বাস সার্ভিস রয়েছে রাঙ্গামাটি পর্যন্ত, ভাড়া জনপ্রতি ৮০-১০০ টাকা। সেগুলোর মাধ্যমেও পৌছতে পারেন রাঙ্গামাটি। তবে সরাসরি বাস সার্ভিসই ঝামেলা ও ঝুক্কিমুক্ত।


কোথায় থাকবেন
থাকার জন্য রাঙ্গামাটিতে সরকারী বেসরকারী অনেকগুলো হোটেল ও গেষ্ট হাউজ রয়েছে। তাছাড়া আরো কিছু বোডিং পাওয়া যায় থাকার জন্য। বোডিংগুলোতে খরচ কিছুটা কম তবে থাকার জন্য খুব একটা সুবিধার নয়। নিন্মে কয়েকটি হোটেল এর বর্ননা দেয়া হলোঃ

(১) পর্যটন হলিডে কমপ্লেক্স
১২ টি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত রুম রয়েছ। প্রতিটির ভাড়াঃ ১৮০০-২০০০ টাকা
৭টি শীতাতপ নিয়ন্ত্রনহীন রুম রয়েছে প্রতিটির ভাড়াঃ ৮০০-১০০০ টাকা
ফোনঃ ০৩৫১-৬৩১২৬

(২) হোটেল সুফিয়া
২৭ টি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত রুম রয়েছ। প্রতিটির ভাড়াঃ ১০০০-১৫০০ টাকা।
৩৫টি শীতাতপ নিয়ন্ত্রনহীন রুম রয়েছে প্রতিটির ভাড়াঃ ৭০০-৮০০ টাকা
যোগাযোগ ০৩৫১-৬২১৪৫, ৬১১৭৪, ০১৫৫৩৪০৯১৪৯

(৩) হোটেল গ্রীন ক্যাসেল
৭ টি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত রুম রয়েছ। প্রতিটির ভাড়াঃ ১২০০ হতে ১৮০০ টাকা পর্যন্ত
১৬টি শীতাতপ নিয়ন্ত্রনহীন রুম রয়েছে প্রতিটির ভাড়াঃ ৭০০ হতে ১৬০০ টাকা পর্যন্ত
যোগাযোগঃ ০৩৫১-৭১২১৪, ৬১২০০, ০১৭২৬-৫১১৫৩২, ০১৮১৫-৪৫৯১৪৬


এছাড়াও রয়েছে আরো বেশ কয়েকটি উল্লেখযোগ্য হোটেল যেমন * হোটেল জজ * হোটেল আল মোবা * হোটেল মাউন্টেন ভিউ * হোটেল ডিগনিটি * হোটেল সাফিয়া * হোটেল ড্রিমল্যান্ড ইত্যাদি। এছাড়া কেউ ইচ্ছা করলে পেদা টিং টিং, টুকটুক ইকো ভিলেজেও থাকতে পারেন।