মাহে রমজানের শুভেচ্ছা। যদিও ব্যবসার ব ও আমার জানা নাই বা বলতে গেলে ব্যবসার কিছুই আমি বুঝি না। তবে চারিদিকের নানা রকম ব্যবসায়ীদের ব্যবসায়ীক অবস্থা দেখে মনে হয় এই বিষয়ে কিছু একটা লিখেই ফেলি। শুনে আসছি অনেক বছর ধরেই যে, বাংলাদেশ ব্যতিত পৃথিবীর অন্যান্য মুসলিম দেশে গুলিতে নাকি রমজানে ব্যবসায়ীরা ব্যবসায়ীক মনোভাব বন্ধ করে দিয়ে সেবা মূলক মনোভাব তৈরি করে কাজ করে। অপরদিকে আমাদের অর্থাৎ বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা তো রমজান পেলে অনেকটা ব্যবসায়ের স্বর্গ পাবার মত অবস্থা হয়ে যায়। কে কিভাবে, কি উপায়, সহজেই অনেক বেশি টাকা আয় করতে পারবে তাঁর রিতিমত প্রতিযোগিতা লেগে যায় ব্যবসায়ীদের মধ্যে। সেক্ষেত্রে অতিরিক্ত মুনাফা অর্জনের নিমিত্তে তারা নানা রকমের অবৈধ কর্ম কান্ড করে বসে সাধারণ ভোক্তা থেকে শুরু করে সমাজের উচু শ্রেনী পর্যন্ত সবার সাথেই। গত কয়েকদিন আগেই রাস্তার পাশের সবজি দোকান থেকে সবজী কিনতে গিয়েই লখ্য করলাম যে সবজি দোকানী এতো দ্রুত ওজন করছেন যেন সঠিক মাপ টা লক্ষ্য করার মত সময়ও ক্রেতার মেলা ভার। অন্য জায়গায় নিয়ে সেই পণ্যের ওজন করলেই ১০০ গ্রাম থেকে ২০০ গ্রাম পর্যন্ত কম পাওয়া যাচ্ছে।
ফলের দোকানে লক্ষ্য করলে মাথা পুরাই নষ্ট হবার উপক্রম হয়। যে আপেলের মূল্য ছিল ১৭০ টাকা রমজানের দুই দিন আগেও, কিন্তু রমজান শুরু হতেই তা ২২০ টাকায় পৌছে গেছে। একই অবস্থা প্রতিটি পণ্যের ক্ষেত্রেই। যারা রেডিমেড ইফতার আইটেম কিনেন তারাও নানা রকমের ইফতার বেশি মূল্য দিয়েই কিনছেন প্রতিদিন। এই ব্যাপারে অবশ্য ভোক্তার কোন মাথা ব্যাথা লক্ষ্য করা যায় না। কেননা সবারই ইচ্ছা থাকে ইফতারে কমপক্ষে একটু মুকরোচক ইফতার হোক। তাই তারা বেশি দাম হলেও তেমন একটা পাত্তা দিতে চান না এই ইস্যুতে। কিন্তু এই পাল্লায় নিম্ন আয়ের মানুষেরা অনেকটাই পিছিয়ে পরে আছে। তারা ইচ্ছা করলেও অনেক কিছুই নিজের মত করে ক্রয় করতে পারছেন না।

যদিও সব সময় আমরা একটা কমন ডায়ালগের মধ্যেই চলছি। তা হল নিত্যপণ্য ক্রয় সিমানার মধ্যে রাখতে হবে সরকারের। কিন্তু এই কথাটা অনেকটা প্রবাদের মতই হয়ে গেছে। কেউ মানবে এমন চিন্তা করাও মোটামুটি ভয়ংকর। আমাদের পরবর্তি দিন গুলি কেমন হবে তা আমরা এখনই খুব সহজেই অনুভব করতে পারি। কতটা ভয়ংকর অবস্থার মধ্যে দিয়ে দিন পার করা লাগবে তাও টের পাই প্রতি মুহুর্তে এই সব জালিম ব্যবসায়ীদের আচার আচরণের কারণে। দোয়া করি আল্লাহ যাতে এই সব ব্যবসায়ীদের মনের ভেতরে আলোকিত করেন এবং সমাজের মানুষের কথা বিবেচনা করে এই একটি মাত্র পবিত্র মাস, সংযমের মাসকে তারা ব্যবসায়ীক মাস হিসেবে না দেখে সেবার মাস হিসেবে দেখতে পারে।
No comments:
Post a Comment